করোনা ঠেকাতে পারে না মাস্ক!

করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের শেষে। ২০২০ সালের গোড়ায় যখন কোভিড নিয়ে মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলো, তখন প্রথমেই একটি কথা জোর দিয়ে সবাইকে বলেছিলেন বিজ্ঞানীরা- মাস্ক পরতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

করোনা ঠেকাতে পারে না মাস্ক!

এখনো কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা বাড়লেই প্রথমেই মাস্কের প্রসঙ্গ ওঠে। ট্রেনে, বিমানবন্দরে, রাস্তায় মাস্ক পরা নিয়ে কড়াকড়ি পদক্ষেপ করা হয়। কিন্তু এই মাস্কের ভূমিকা নিয়েই এবার প্রশ্ন। এবং সেটি বেশ জোরদার। হালে পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের একটি দল জানাল, কোভিড সংক্রমণের হার কমাতে মাস্কের ভূমিকা খুবই নাকি কম।

সম্প্রতি কোচরেন লাইব্রেরির তরফে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। ১২ জন বিজ্ঞানীর দলটি যে গবেষণাত্রটি লিখেছে, সেটির নাম ‘ফিজিক্যাল ইন্টারভেনশন্স টু ইন্টারাপ্ট অর রিডিউজড দি স্প্রিড অব রেসপিরেটরি ভাইরাসেস।' বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে পরীক্ষা করে তারা দেখেছেন, কোভিড ঠেকানোর ক্ষেত্রে মাস্কের বিশেষ কোনো ভূমিকাই দেখা যাচ্ছে না। শুধু কোভিড নয়, ফুসফুস বা শ্বাসযন্ত্রের কোনো সংক্রামক ব্যাধি ঠেকানোর ক্ষেত্রেই মাস্ক তেমনভাবে কোনো ভূমিকা নিতে পারছে না। শুধু মাস্কই নয়, একই ধরনের কথা প্রযোজ্য হাত ধোওয়ার ক্ষেত্রে। তাতেও কোনো লাভ হয়নি বলে মনে করছে বিজ্ঞানীদের এই দলটি।

কী লেখা হয়েছে এই গবেষণাপত্রে? বলা হয়েছে, ‘মাস্ক পরলে ফ্লু বা কোভিডের মতো ক্ষেত্রে খুব কম লাভ হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে কোনো লাভই হয় না। গবেষণাগারেও যেমন এটি দেখা গেছে। খোলা জায়গাতেও একই জিনিস দেখা গেছে।’

সব মিলিয়ে প্রথম পর্যায়ে ৭৭৯৯ জনের উপর তিন দফায় এই পরীক্ষা চালানো হয়। তার পরের পর্যায়ে ৮৪০৭ জনের উপর পাঁচ দফায় পরীক্ষা চালানো হয়। দু’টি ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, মাস্কের ব্যবহার করোনা সংক্রমণ আটকাতে বিশেষ কোনো কাজে লাগেনি। পরীক্ষকরা জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে একবার ফ্লু ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। তার পরে একই ধরনের সমীক্ষা চালানো হয় ২০১৬ সালে। এবং সব শেষে গোটা অতিমারি পর্যায় জুড়ে এই গবেষণা তাঁরা চালিয়েছেন।

তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, সাধারণ মাস্ক কোনও কাজে না লাগলেও এন-৯৫ হয়তো কাজে লাগলেও লাগতে পারে। আর তার জন্য বিশেষ ধরনের এন-৯৫ মাস্ক তৈরি করার কথাও ভাবছেন তারা। তবে মোদ্দা কথা হলো, নতুন এই গবেষণা থেকে পাওয়া ধারণা কোভিড সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষেত্রে আগের সব মতকে প্রশ্নের মুখে ফেলল।