নিজ উপজেলায় স্মার্ট কার্ডে কৃষি ঋণ উদ্বোধন করলেন তথ্যমন্ত্রী
চট্টগ্রাম-৭ আসনের সংসদ সদস্য তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নিজ উপজেলা রাঙ্গুনিয়ায় এবি ব্যাংকের স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে কৃষি ঋণ বিতরণ উদ্বোধন করেছেন।

গতকাল সোমবার (৬ মার্চ) সচিবালয়ে নিজ দফতর থেকে ভার্চুয়ালি রাঙ্গুনিয়ায় এবি ব্যাংক আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজাল, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সজল কুমার তালুকদার, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম চিশতি প্রমুখ রাঙ্গুনিয়া প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এ সময় মন্ত্রী হাছান স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে কৃষি ঋণ বিতরণের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতি এবং আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। বাংলাদেশে এখনও ৭০ ভাগ মানুষ গ্রামেই বসবাস করে। জিডিপিতে যদিওবা শিল্পখাতের অবদান কৃষিকে ছাড়িয়ে গেছে তবুও এখনও দেশের ৭০ ভাগ কিম্বা তার চেয়েও বেশি মানুষ নানাভাবে কৃষির এবং কৃষি অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল। এ জন্য স্মার্ট কার্ডে কৃষি ঋণদান অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ।
ব্যাংকিং ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণের কথা উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, আজ থেকে ২০-২৫ বছর আগে শুধুমাত্র শহর অঞ্চলে কিম্বা নগর কেন্দ্রগুলোতে ব্যাংকের শাখা থাকতো। আমাদের সরকার নিয়ম করে দিয়েছে এখন নতুন ব্যাংকের শাখা খোলার ক্ষেত্রে সম্ভবত অর্ধেক নগরে আর অর্ধেক নগরের বাইরে করতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক সেভাবেই অনুমোদন দিয়ে থাকে, যাতে করে গ্রামের মানুষ ব্যাংকিং সুবিধার আওতায় আসে। আমি এবি ব্যাংকে ধন্যবাদ জানাই কয়েকদিন আগে এবি ব্যাংক রাঙ্গুনিয়ায় একটি উপশাখা উদ্বোধন করেছে এবং সেই শাখার মাধ্যমেই আজকে কৃষি ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে।
নিজ জনপদের বর্ণনায় হাছান মাহমুদ বলেন, রাঙ্গুনিয়া একটি বর্ধিঞ্চু জনপদ। আমাদের এ উপজেলায় এক
লাখের কাছাকাছি মানুষ মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এবং আমেরিকা, মালয়েশিয়ায় বসবাস করে। তারা বিদেশে কাজ করে ও নিয়মিত রেমিট্যান্স পাঠায়। এই রেমিট্যান্স আসার ক্ষেত্রেও রাঙ্গুনিয়ার ব্যাংকের শাখাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগে বিভিন্ন এনজিও’র পক্ষ থেকে ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া হতো এবং তারা মানুষের ওপর চাপ প্রয়োগ করতো, এখনও যে করে না তা নয়। তারা এমন চাপ প্রয়োগ করতো, দেখা যেতো ঋণের তিনগুণ চারগুণ দিয়েও ঋণ মুক্ত হয় না, এ রকম ঘটনা ঘটেছে। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ নিয়ে সেই ঋণ শোধ করতে না পারার কারণে সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় অনেকে আত্মহত্যা করেছে এমনও ঘটনা ঘটেছে। সেই ক্ষেত্রে তফসিলি ব্যাংক বিশেষ করে এবি ব্যাংকসহ যে সমস্ত ব্যাংক এখন ঋণ দিচ্ছে তা কৃষকের জন্য, সাধারণ মানুষের জন্য অনেক সহজ, সুদও এনজিও’র তুলনায় অনেক কম। এটি গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।’
এ সময় ঋণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘আমাদের সরকার যুব উন্নয়ন অধিদফতরের মাধ্যমে জামানতবিহীন ঋণও প্রদান করে আসছে। এতে করেও যুবকেরা স্বাবলম্বী হচ্ছে। যুব উন্নয়ন অধিদফতরের ঋণের সুবিধাটা সেটি আমাদের যুবকেরা পুরোপুরি জানে না। সেটিও তাদের জানানো প্রয়োজন। আর এবি ব্যাংককে অনুরোধ জানাবো তাদের কৃষি ঋণসহ আরও নানা ধরণের ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প নিয়ে কৃষকদের জন্য কর্মশালা করার জন্য। আসুন সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমাদের দেশ স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাক, ৪১ সাল নাগাদ সত্যিকার একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে আমরা পরিণত হই।’